নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
একটু বৃষ্টি হলেই নেত্রকোনা পৌরসভার অধিকাংশ ওয়ার্ডের রাস্তায় রাস্তায় হাঁটুসমান পানি জমে পড়ে। আবার ১নং ওয়ার্ডের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ভবনের সামনের রাস্তায় জলাবদ্ধতা দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে দিনের পর দিন। এতে চলাচলের ক্ষেত্রে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে পৌরবাসী ও যাত্রীমহল । পানিতে ডুবে থাকা সড়কের গর্তে পড়ে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা ও। নিয়মিত ড্রেন পরিষ্কার না করায় এই দুর্ভোগের সৃষ্টি হচ্ছে বলে মন্তব্য করছেন সচেতন মহল, অন্যদিকে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের চিত্র প্রকট আকার ধারণ করলে ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়নের বদলে পৌর কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কেবল নির্মাণ ও ব্যয়মূলক প্রকল্পের দিকে।
জলাবদ্ধতায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়ছেন পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও পূর্বধলা রোডের যাতায়াতের করা মানুষ গুলো এছাড়া সামান্য বৃষ্টিতেই এখানে হাঁটুসমান পানি জমে যায়। অথচ এখানে রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড এই সড়কে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ ও যানবাহনের চলাচল । জলাবদ্ধতায় তাদের দুর্ভোগ সবচেয়ে বেশি।
এমন দুর্ভোগের বিষয়ে এই এলাকায় বসবাসরত বাসিন্দারা জানান, বৃষ্টির পর কয়েক ঘণ্টা ও লেগে যায় সড়ক থেকে পানি নামতে। নেত্রকোনা জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা লোকজন চলাচলে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে যান এই রাস্তায় পানি জমার কারণে সড়ক বড় বড় গর্তে পরিনত হয়েছে তাই যেকোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দূর্ঘটনা । সড়কের পাশের ড্রেনটি প্রস্ততকারক করা খুবই জরুরি। এই ওয়ার্ডের আরও এক এলাকার বাসিন্দা বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী ড্রেনে ব্যবস্থা না করায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে এখানে। আর পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য পৌর কর্তৃপক্ষের কোনো মাথাব্যথা নেই। দীর্ঘদিন ড্রেনগুলো পরিষ্কার না করায় ড্রেনের ওপর ময়লা-আবর্জনা জমে পানি নিষ্কাশনব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এজন্য সামান্য বৃষ্টিতে এই রাস্তা বড় বড় গর্তে পরিণত হচ্ছে।
নেত্রকোনা জেলার দূরদূরান্ত থেকে আসা স্থানীয় বাসিন্দাদেরও চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। জলাবদ্ধতা নিরসন ও নাগরিকদের দুর্ভোগ লাঘবে পৌরসভার কোনো উদ্যোগ আছে কি না জানতে চাইলে নেত্রকোনা
পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম খান এই প্রতিনিধিকে বলেন, ওই এলাকায় সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এই এলাকার স্হানীয় বাসিন্দাদের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এই রাস্তাটি আগামী কিছু দিনের মধ্যে টেন্ডার আহ্বান করা হবে। কাজ শেষ হলে আশা করি অতিদ্রুত এই ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের দুর্ভোগ লাঘব করতে পারব। তিনি আরও বলেন, দ্রুত সময়ের ভিতরে এই পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সরেজমিন খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, পৌর এলাকার বেশির ভাগ ওয়ার্ডের জলাবদ্ধতার চিত্র একই রকম। বৃষ্টির পর জলাবদ্ধতার কারণে অনেক ওয়ার্ডের সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের রেলক্রসিং হতে চাঁনখার মোড় পর্যন্ত একপাশে ড্রেন দেখা গেলেও অন্য পাশে নামে মাত্র ড্রেন রয়েছে।ড্রেনের মধ্যে ময়লা আর্বজনা ফেলে রাখায় পানি নিষ্কাশন বন্ধ কোথাও পানি যেতে না পারায় রাস্তায় জমে থাকে।গত দু-দিনের বৃষ্টিতে রাস্তায় চলাচলে বিপদ জনক হয়ে দাঁড়িয়েছে।গতবর্ষায় গর্ত ভরাট করলে কিছু দিনেই তা আবার ভাঙ্গন শুরু হয়।
এছাড়া নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল এলাকায় জলাবদ্ধতার চিত্র বিদ্যমান। জমে থাকা পানি কখনো কখনো ঢুকে পড়ছে রাস্তার পাশের দোকানপাটে। এতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। পৌরসভার বাসিন্দাদের অভিযোগ, পৌরসভার অদূরে নদী থাকলেও কার্যকর ড্রেনেজ ব্যবস্থার অভাবে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে এই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। শুধু বর্ষা মৌসুমেই নয় সামান্য বৃষ্টি হলেই জমে পড়ে পানি।
১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আমিরুল ইসলাম বলেন, নব্বইয়ের দশকের পর এই ওয়ার্ডের সড়ক সংস্কার ও ড্রেনেজব্যবস্থার উন্নয়ন অনেকটাই কম। এ কারণে সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। আয়তনে পৌরসভার ড্রেনেজব্যবস্থার উন্নয়নমূলক কাজে প্রতিবছর ব্যয় হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। কিন্তু তারপরও সমস্যা থেকেই যাচ্ছে।
সচেতন মহলের বাসিন্দারা আরও বলেন, ড্রেনেজগুলোর আউট ফল, নিয়মিত পরিষ্কার না করার কারণে পৌর এলাকার ড্রেনগুলো অকেজো হয়ে পড়েছে। এ কারণে নির্মাণ ব্যয়ের শত শত কোটি টাকা নষ্ট হচ্ছে। পাশাপাশি যেসব জায়গায় ড্রেনগুলো সচল ছিল, ওই জায়গায় পানি জমাট বাঁধার কারণে ড্রেন ভরাট হয়ে গেছে। এছাড়া পৌর এলাকার খাল-বিল দখল হওয়ার কারণে আজ জলাবদ্ধতা স্থায়ী হচ্ছে। এসব খাল দখলমুক্ত না করলে ভবিষ্যতে আরও বড় সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে নেত্রকোনাবাসীকে। তাই পৌরসভার মেয়র ও জেলা প্রশাসকের কাছে একটায় দাবি এই রাস্তা টা নতুন রাস্তা নির্মাণ করে দিবেন এবং ড্রেন গুলো পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে দেন।
নেত্রকোনা পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী এই প্রতিনিধিকে বলেন ভিন্নকথা, লোকবলের অভাবে ড্রেনগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করা সম্ভব হচ্ছে না। এটিই মূলত কয়েকটি ওয়ার্ডে জলাবদ্ধতার মূল কারণ। এসব বিষয় মাথায় রেখে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে। আশা রাখি, অচিরেই এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাবে নেত্রকোনা পৌরবাসী।
Leave a Reply